মা সু দ খা ন
প্রলাপবচন
নদ এসে উপগত হবে ফের নদীর ওপর
দুই পারে জমে উঠবে কপট কাদার ঘুটঘুটে কেলেংকারি
মাঝখানে চোরাঘূর্ণি চোরাস্রোত
এলোমেলো এলোমেলো বাউরি ভাবনা এসে
পাক খেয়ে ঢুকে পড়বে বৃষ থেকে মিথুনের অধিক্ষেত্রে...
মাকাল ফলের মৃদু মনস্তাপ
করলা-লতার শ্যামলা আক্ষেপ
কোকিলস্য প্রবঞ্চনা, কাকের বাসায় উপঢৌকন
ভরা বিলের ওপর দিয়ে ভেসে আসা ভেজা-ভেজা সুর
হুদহুদ পাখির অস্থিরতা, অসমাপিকার লঘু তঞ্চকতা
একরোখা অশ্বের অস্মিতা, উগ্রবসনা আগুনের চঞ্চল রসনা...
আলগোছে সবকিছু পাশ কেটে গিয়ে
ওইদিকে বর থাকবে কনের বশে
খলনায়কের দাঁতের নিচে পড়বে কট্টরপন্থী কাঁকর
চার্জ করা হবে পশ্চিমের ব্লাস্ট ফার্নেসে
আর ঝাপটা এসে লাগবে পূর্বেরটা থেকে
খামাখা দিওয়ানা হবে রঙিলা বিড়ালিনী
ঘনঘন গণ-হাইপ উঠবে মামুলি ঘটনা ঘিরে এমনি-এমনি
হিস্টিরিয়ায় কাঁপতে থাকবে দেশকাল
সাত সাধু এক হবে, এক শয়তান সাত
দোষযুক্ত আলু নামবে হিমাগারের শ্রোণিচক্র থেকে...
এবং হয়তো আমি একদিন ঠিকই
পড়ো-পড়ো ঘরকে যোগাতে পারব
গাঁট-অলা তিন-বাঁকা শালকাঠের সমর্থন
নিশ্চিহ্নকে দেখাতে পারব কিছু লুপ্তপ্রায় চিহ্নের ইশারা
বিশেষকে কোনো ভ্রান্তিকর নির্বিশেষের আভাস
বেদিশাকে দিশার বিভ্রম...
আর দুম করে লিখে ফেলব এমন এক কবিতা একদিন,
যা পড়ে ভৌতিক সুর তুলবে একসঙ্গে সাধু ও শয়তান
সাপ-আর-অভিশাপে-গড়া, মতানৈক্যে-ভরা গামারিকাঠের গিটারে
আর ‘চলে আয়’ বলে খোদ খোদাতালা টুইট পাঠাবেন দিব্য টুইটারে।
সৌ ম্য দা শ গু প্ত
দেয়াল প্রস্তুত
দেয়াল প্রস্তুত, তুমি স্বকীর্তিস্বাক্ষর রাখবে, প্রীতির আঙুলস্পর্শে মুখচ্ছবি, পিকনিকের ঘুম
প্রভূত পছন্দ পড়বে, পছন্দ, পছন্দ, খুশি, খোলাজল এসে ঘরে বিছানায় জমাবে প্লাবন
তোমার আনন্দ তাই আমার উপরে, বন্ধু, তোমাকে দেখিনি তবু পূর্বদিগন্তের আলোড়নে
তোমাকেই দেখি, শুনি, ভাবি কত সমারোহে তোমার অবাধ চলাফেরার সন্ধান করে মন
জয়ধ্বজা হয়ে এসো, কলম ও তিলক, ছৌ, বেইজ, লালন, আজ তোমাতে গুরুর সম্ভাবনা
এ-দেয়ালে অজন্তার গুহাচিত্র রেখে যাও, একদিন তোমাকেই খুঁজে নেবে প্রত্নতত্ত্বজীবী
বিমুগ্ধদৃষ্টিতে দেখবে বিগতযুগের তথ্য ছবিতে, সংঘে ও সত্যে, চিন্তামণি, রেখে যাও ধ্বনি
রেখো মা দাসেরে মনে, দেয়ালচলচ্ছবি, সর্বসুখ রেখো ধরে, বিষণ্ণতা রেখো না এখনি!
গৌ ত ম ঘো ষ দ স্তি দা র
গণহত্যার ঘাটে
[ঋণ : ভাস্কর চক্রবর্তী]
কখনও যাইনি চিলেকোঠায়, কোনওদিন হাসপাতালে বা চিতারচনায়ও
যতটুকু-যা, সবই ওই আলোবাতাসের টোলে, কোলাহলের আখড়ায়—
আপনি সাদা-পোশাকে ঢুকতেন, গোয়েন্দাপ্রধানের মতো, অন্বেষণপ্রবণ
দূর থেকে আপনাকে লক্ষ করেছি অভিভূত খোচরের মতো, বিষাদবিকেলে
আপনি তো আসলে রঘুনাথকে খুঁজতেন বরানগর থেকে কলেজ স্ট্রিটে এসে
পরে আপনাকে ভেবেছি সূযাস্তের আগে নবাবি ব্যাটসম্যানের মতো
কিংবা, কখনও মনে করি কবিসাজহীন সৌমিত্রনটের মতো, অনাটকীয়
সে-সব কল্পনা কেবল, আপনি তো আসলেই শ্রেষ্ঠ কবিতার ভূমিকামাত্র—
আমাদের সকলের শালবীথি, সর্বোচ্চ, গ্রিকপুরাণ-থেকে-উদ্ধৃত দেববিগ্রহ যেন
নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কবিতালেখা ছাড়া আর-কিছুই করেননি জীবনে
ভেবেছিলেন গীতিকবিতা নিয়ে একটা হেস্তনেস্ত করবেন একেবারে নীরবে
পোস্টমাস্টারের মেয়ে গোলাপি যুবকের সঙ্গে শুধুমাত্র জুতোজোড়া নিয়ে
বাড়ি থেকে স্বর্গের দিকে চলে গেলেও আপনি স্বর্গের বদলে স্যারিডনে স্থির—
জিরাফের ভাষায় মেয়ের কথা লিখলেও, স্ত্রীর বিষয় সবটাই অনুমানসাপেক্ষ
আমরা সেই প্রথম-কাব্য থেকেই আপনাকে বুঝে পাইনি, বুঝিনি জলের সারল্য
অদ্রীশ আপনার রক্তমাংসের বিবরণ নিল, আত্মহত্যার কথাও তুলেছিল সে
আপনি তো কবেই লিখে রেখেছেন, আত্মহত্যা কিছুতেই নয়, অদ্রীশ পড়েনি—
আপনাকে সেদিন দিকভ্রষ্ট জাহাজের অবিচল ক্যাপ্টেন মনে হল আমাদের
মানিক শামশের সুব্রত তুষারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, ছিল প্রত্যাখ্যানও
তবু, আপনিও গেলেন তাঁদের পাড়ায়, পরে দেবাশিসও অনুগামী আপনার
খবর উড়ে আসে বৃষ্টিবাতাসে, বাপ্পাদিত্য নিরাকার ছবি করছে আপনাদের নিয়ে
গণহত্যার ঘাটে গেলেই আপনাকে মনে পড়ে, তুষার ও ফাল্গুনীর অবিনশ্বর পাড়া—
দেখি, রতনবাবু রোডে ভেঙে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানবিরোধী কবিদের সেই জমিদারবাড়ি,
চিতাদূরে বসে ভাবি, আপনি কি উপমামাত্র, অদ্রীশ আজও আপনার সাক্ষাত্কারী!
প্র বা ল কু মা র ব সু
হয়ত অকাতরেই
কী দিয়েছি? দিয়েছি কি কিছু তোমাকে
তাৎক্ষণিকের চিহ্ন বিহিত জলও
অকারণ শুধু দিয়েছি অবিশ্বাস
আর অন্ধকার, ঢেকে দিতে চেয়ে আলো
অক্ষম নাকি, এমন ভেবেছে যে নিন্দ্রকে
তুমি তো গ্রহণে কোথাও ্কৃপণ হওনি
আজ ফেরাবার কথা কেন তবে বলছ
হয়ত অকাতরেই দিয়েছি, যেমন ফুল ফুটে ওঠে মৌন
শু ভ্র ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
পল মলডুন
আপনার কবিতা ১৯৬৮-১৯৯৮ নিয়ে বাইরে ক্যাম্পাসে সমুদ্রমুখি অ্যাবেরিস্টউইথ
বা আচমকা কোনও পড়ায় আমার ভয়ঙ্কর বাঙালি হ্রস্ব স্বরবর্ণহীন উচ্চারণে
বা আচমকা কোনও পড়ায় আমার ভয়ঙ্কর বাঙালি হ্রস্ব স্বরবর্ণহীন উচ্চারণে
যেভাবে দূরের কোনও জীবন পর্দায় পুরনো শব্দের মধ্যে দিয়ে উঠে যাচ্ছে
প্রাচীন রাজধানীগামী হাইওয়ে যেভাবে মেয়ে শিশুটির সোনালি চুল হাওয়ায় স্পর্শ করল বৃষ্টি
প্রাচীন রাজধানীগামী হাইওয়ে যেভাবে মেয়ে শিশুটির সোনালি চুল হাওয়ায় স্পর্শ করল বৃষ্টি
সেভাবেই আমি পালাতে চাইছি আচমকা আবিষ্কার করা তরুণ
ঔপনিবেশিক অ্যাডমিরালের কবরের মত গিলতে আসা আমার জন্মের মফস্বল থেকে
ঔপনিবেশিক অ্যাডমিরালের কবরের মত গিলতে আসা আমার জন্মের মফস্বল থেকে
ম ণি শং ক র বি শ্বা স
শিশির
মনে হয় সাকোর উপর এইতো সেদিন—সাঁঝের বেলায়—
একবার আলো জ্বলে উঠে তারপর নিভে যায়
সূর্যাস্তের রঙে নীল পতাকায় লেখা সেই নাম
জীবনের বাকি সব ছবি কাগজের নৌকা বানালাম।
একটি পাখিও যদি উড়ে যায় সেই শূন্যস্থান—
কোনো শূন্যস্থান পূর্ণ করা এক অসম্ভব গান।
রাজকুমারী তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে পথের দাবীতে
জীবন বদলে গেছে, শুধু শুধুই জীবন গেছে বয়ে
যেন-বা কাঙ্গাল এক পুরনো রাস্তার ধারে দাবিহীন শীতে
শীতকাল চলে যায় দ্রুত, অন্ধকারে একা তাকে সয়ে
সান্ত্বনার মত জানি, তবুও পথের মৃত্যু হয়, ক্রমে যেতে আকাশের দিকে—
অন্তিম জলের আগে আমার এ অশ্রুজল, বিঁধে থাকে জানালার শিকে।
দী প ঙ্ক র মু খো পা ধ্যা য়
কাদম্বরী: তিন
গোধূলি বিষণ্ণ হলে মনখারাপ নৈঋর্ত মনে পড়ে তার। স্মৃতিবেদনায় ফিরে-ফিরে আসে মুগ্ধতার মেঘমালা। ক্রমশ অবশ হয় স্নায়ু। সমস্ত ছলাকলা থেকে দূরে দক্ষিণের বারান্দায় ব্রাহ্মসঙ্গীত গেয়ে ওঠেন ঠাকুর। আর রাতের ট্রেনের মতো দুর্বার ছুটে আসে যে মেয়ে, তার মুখে ঝলসে ওঠে হাজার ফ্লাডলাইট। মুখ ঢাকার ফন্দিফিকির সে শিখে নিতে পারেনি। তার পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে লাল টিপ। পূর্ণিমার মোহাচ্ছন্ন উজানে সে ভেসেছে একা। অরক্ষিত অবগাহন তাকে গর্ভ দিয়েছে। ওই যায়, নবনির্মিতির পথে ভেসে যায় স্বৈরিণী...তুমি তার পিছু ডেকো না, কাদম্বরী!
সু দী প্ত মা জি
পিতৃপক্ষে লেখা কবিতা
পিতৃপক্ষে লেখা কবিতা
কোথায় তোমার ঘর, আজ আর খুঁজেও
পাচ্ছো না...
পাচ্ছো না...
ব্যথার দু'হাত ভর্তি এতসব সমাপিকা ক্রিয়া
গানের নোলক পরে ভরে ওঠা কান্নার উঠোন
এমন শারদপ্রাত এর আগে দু'চোখে দেখিনি
গানের নোলক পরে ভরে ওঠা কান্নার উঠোন
এমন শারদপ্রাত এর আগে দু'চোখে দেখিনি
অস্ফুটে বলেছো শুধু : দরজা খুলে দাও,আর
সইতে পারছি না!
সইতে পারছি না!
দরজার দুই প্রান্তে ঘর আর অচেনা বাহির
চিত্রিত জলের রঙে
অনিঃশেষ
আঁকা হয়ে উঠছে অবশেষে...
চিত্রিত জলের রঙে
অনিঃশেষ
আঁকা হয়ে উঠছে অবশেষে...
গৌ রা ঙ্গ মো হা ন্ত
দুটি কবিতা
তোমার কাছে যেতে
তোমার কাছে যেতে উড়তে হয় অনেক দূর। ওড়ার জন্য কর্তৃপক্ষের আদেশ নিতে হয়, শরীর খুলে দেখাতে হয় বিশুদ্ধ পরিকল্পনা। আকাশকে স্বাধীন মনে হয় না। আকাশ হয়ে ওঠে খণ্ডিত রাজতন্ত্র। আমি খণ্ড খণ্ড আকাশের সীমানা পেরিয়ে যাই; বাতাসের শীতলতা আমার শ্বাসপ্রবাহে প্রভাব ফেলে। আমি আকাশে হাঁটতে থাকি; যাত্রাপথ এক সেন্টিমিটারও কমে না। কখনো কখনো পরিভ্রমণের জন্য পায়ের কোনো ভূমিকা থাকে না। বাধ্য হয়ে পা গুটিয়ে রাখি, আবার উড়তে থাকি। সময় জোন ভাঙতে ভাঙতে ক্লান্ত হয়ে তোমার কাছে ফিরে আসি। তোমার কাছে আসতে আমার সবচে বেশি সময় লাগে।
হাওয়াপথ
বাতাস-এঞ্জিনের শব্দের ভেতর নির্জনতা - পথছবি যে চুম্বনকে ঢেকে রাখে তা প্যাশন ফলের রক্তিম বর্ডার পেরিয়ে আসছে। হাওয়াপথে নদীর ঢেউ বসানো থাকে। আমি ক্রমাগত দুলছি - নৈঃশব্দ্যের কাছে ফুটে চলেছে পার্কফুল। আমার পাশে কয়েক ঘন্টার জন্যে কিছু যাত্রী কম্বলের নিচে মৃত্যুবরণ করছে; তাদের নাকে জমছে শব্দফেনা। মানুষের বিচিত্র সুখের শার্ডোনে টেনে দেখাচ্ছে দ্রাক্ষাযৌবন। আমি কেবল উন্মাদ হয়ে উঠছি - মাধব ঝরনায় ভিজে হেঁটে হেঁটে অপেরা গৃহে ঢুকছি - হার্বারের কম্পিত গ্যাসপ্রদীপকে পেছনে ফেলে ছুটে যাচ্ছি পার্কে। আমার কোনো সুখ নেই - আমি মৃতের
অভিনয় জানি না।
ক ল্প র্ষি ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
ফেরা
কেবল ছাল ছাড়িয়ে নিচ্ছে
এই অসম্ভব কাঁপা শীতের বিকেল
তবু একটুও শব্দ হচ্ছে না কোথাও
একটুও লাগছে না কোনখানে
যেন একটা গাছ কাউকে কিছু না বলে
চুপচাপ নামিয়ে রাখছে পাতা
পাওনাদার শীতের ডিসেম্বরের
যেন একটা জন্ম ভিখিরি
অসহায় খুলে ফেলছে শাড়ি
দারোগা ডিসেম্বরের কাছে
অথচ বাতাসে দীর্ঘদিন কোন বিপ্লব নেই
অথচ আকাশ শান্তনীল পুরনো কবিতার মতো
শুধু কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় আশ্রয়ের লোভে বাড়ি ফেরা
শুধু অচেনা শহরে ঘটি হারিয়ে ফেলবার ভয়ে
সকাল সকাল বাড়ি ফেরা
একটু সন্ধে হয় হয় ...
প্রতিবেশীর বাসন আছড়ে পড়ছে আমাদের সদর দুয়ারে
বাবা রেগে গিয়ে মাকে কামড়ে দিচ্ছে
মা রেগে গিয়ে বাবাকে কামড়ে দিচ্ছে
দৃশ্যে দৃশ্যে গুলিয়ে উঠছে শহর
দেখি আমার বমি পাচ্ছে খুব
দেখি আমার পথ সরে যাচ্ছে ঘৃণায়
সকাল সকাল বাড়ি ফিরছি
একটু সন্ধে হয় হয়
কেবল ছাল ছাড়িয়ে নিচ্ছে
এই অসম্ভব কাঁপা শীতের বিকেল
তবু একটুও শব্দ হচ্ছে না কোথাও
একটুও লাগছে না কোনখানে
যেন একটা গাছ কাউকে কিছু না বলে
চুপচাপ নামিয়ে রাখছে পাতা
পাওনাদার শীতের ডিসেম্বরের
যেন একটা জন্ম ভিখিরি
অসহায় খুলে ফেলছে শাড়ি
দারোগা ডিসেম্বরের কাছে
অথচ বাতাসে দীর্ঘদিন কোন বিপ্লব নেই
অথচ আকাশ শান্তনীল পুরনো কবিতার মতো
শুধু কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় আশ্রয়ের লোভে বাড়ি ফেরা
শুধু অচেনা শহরে ঘটি হারিয়ে ফেলবার ভয়ে
সকাল সকাল বাড়ি ফেরা
একটু সন্ধে হয় হয় ...
প্রতিবেশীর বাসন আছড়ে পড়ছে আমাদের সদর দুয়ারে
বাবা রেগে গিয়ে মাকে কামড়ে দিচ্ছে
মা রেগে গিয়ে বাবাকে কামড়ে দিচ্ছে
দৃশ্যে দৃশ্যে গুলিয়ে উঠছে শহর
দেখি আমার বমি পাচ্ছে খুব
দেখি আমার পথ সরে যাচ্ছে ঘৃণায়
সকাল সকাল বাড়ি ফিরছি
একটু সন্ধে হয় হয়
চ ন্দ ন ভ ট্টা চা র্য
দ্বিতীয় রূপকথা
একজন দার্শনিক হিসেবে বলতে পারি, তোমার আমাকে ছেড়ে যাওয়া ছিল আন্তর্জাতিক মানের ঘটনা। তুমি পরিহার করেছ, আমার এই স্বীকারোক্তি অবশ্য আমার একধরণের চলে যাওয়াকেও প্রমাণ করছে।
যতক্ষণ না কেউ বলে সে ফিরে যাচ্ছে, নিয়মমতো ধরে নেওয়া হয়, মানুষটা উপস্থিত; আর যদি মুখ ফুটে বলল ‘ঘর বাঁধলাম, বাবি’, তবে তো কথাই নেই। কিন্তু একজন দার্শনিক সংক্ষেপে একজন দার্শনিক বলেই এই কাছে থাকা বা দূরে যাওয়ার রহস্যে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখে না। সে জানে, যেমন কাল্পনিক বিদায় আছে, তেমনি কাল্পনিক উপনিবেশও, তাই শুরুতেই দ্বিতীয় রূপকথাকে ভেঙে দিতে এগিয়ে আসে।
আবার, হারিয়ে যাওয়াকে হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে, বা প্রস্থানের অভিনয়ের সঙ্গেও গুলিয়ে ফেলা উচিত হবে না, যদিও বলা যায়, অভিনয় সবচেয়ে স্থায়ি বাস্তবতা।
তুমি বলেছিলে পাশে আছি, তারপর দেখা গেল মুছে দিয়েছ আমাকে; তাহলে আইন মতো ধরলে, পাশে থাকার সময়ই অগ্রহণ করেছিলে। শুধু তাই নয়, তুমি অনন্তকাল ধরেই দূরে আছ। মানে, ছেড়ে যাওয়ার মধ্যে একরকম অসীমতা রয়ে গেল। যদি শান্ত আর শান্তিতে থাক, মনে হতে পারে বুঝি আমার মন ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছ। আবার এমনও ভাবা যায় যে তুমি হয়তো সম্ভবত শান্ত শান্তিতে বিরাজ করছ অন্য কোথাও।
তাহলে, পরিবেশ সব সময়ই সংকটে রয়েছে। অথচ, আমরা দুঃখের লাগোয়াভাবে সংকটের কথা বলি, সুখের সংযুক্তে বলি না। কেন বলি না?
যদি শক্তি হিসেবে দেখা যায় --- তোমার চলে যাওয়া ভীষণ সৌন্দর্যময়, যাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। কারণ সৌন্দর্যের গভীরতম ভেতরে বিচ্ছেদ রয়েছে আর সে খুব ক’রে ওখানটাতেই থাকতে চায়।
ওকে বসতে দিও।
ঋ জু রে খ চ ক্র ব র্তী
নাম
আসলে প্রশ্রয় থাকে প্রেমের শরীরে।
পোশাকি নামের সুতো ছিঁড়ে
নতুন নতুন যত ডাকনাম উঁকি দিয়ে যায়
কখনও মায়ায়,
কখনও ছুটির অবকাশে,
কখনও বা হাত ধরে টেনে নিয়ে রাস্তা পেরুতে গিয়ে সচকিত,
বিচ্ছেদ আসন্ন জেনে শোক-অবহিত
সেইসব মুহূর্তেরা নিভৃতে কোমলতর ত্রাসে
তোমাকেও সঙ্গোপনে তেমনই জড়ায়।
কোনও কি নিথর অভিধায়
তোমাকে আঁটাতে পারি, বলো, এই আশ্রয়ের অনৃত তিমিরে?
বাহ্যত প্রশ্রয় থাকে, ছদ্মনাম মিশে থাকে ভিড়ে।
কু ন্ত ল মু খো পা ধ্যা য়
একটি প্রতিবেদন
আমার ডায়ালিসিস-দিদিভাই দুর্বল এবং হাঁটতে গেলে টাল খেয়ে পরে যান । কিন্তু ,সুস্থ অবস্থায় ,দিবসের পর দিবস কাজ করে করে তাঁর মনের শক্তি এতটাই যে , রিকসায় চাপার সময় যদি সাহায্য করতে যাই ,তিনি ধমক দেন আমাকে । ফলত আমি একা একাই উঠে পড়ি বাহনে এবং দেখতে থাকি মজা । আমি এর শেষদৃশ্য জানি এবং অপেক্ষা করি অন্তিম মুহূর্তের ।দিদিভাই রিকসার কাঠামোর লোহার দণ্ডটিতে পা দিয়ে উঠতে যান ।পারেন না ।আবার চেষ্টা করেন ।পারেন না ।এরপর লোলচর্ম কাঁপাকাঁপা হাতদুটি উপরের দিকে বাড়িয়ে ধরেন ...মুহূর্তে ওই বাড়ানো হাতদুটি মনে হয় আজানের মুদ্রা ...মুহূর্তে মনেহয় যেন সমস্ত মানবতার হয়ে এই বিশ্বপ্রকৃতির কাছে ভিক্ষা চাইছে মানুষ ...
রিকসার উপর থেকে আমি , ঈশ্বর , প্রতিদিন এই মজার দৃশ্য দেখি ।
মন ও মাধবীজুড়ে বৃষ্টি পড়ে
গৌ ত ম ম ণ্ড ল
বৃষ্টি
যে নদী রাত্রির কাজল, তার তীরে
এসে দাঁড়াই,বসি
দেখি নীলে ছেয়ে গেছে আকাশ
একটি দুটি পাখি উড়ছে
আর শব্দ করে
টুপটাপ ঝরে পড়ছে শিশির
যতবার এই নদীতীরে আসি
ততবার বনপথে ডেকে ওঠে কোকিল
চ ন্দ ন ঘো ষ
মাতাল
রাত্তিরে মাতাল কথা বলে
কথা, কথা, কথা
শব্দের বুদ্বুদ ওড়ে, শব্দের বুদ্বুদ ফেটে যায়
বধির ফোনেরা খুব নিশ্চিন্ত মুখে
হাঁ হাঁ করে, হুঁ হুঁ করে
যেন সব দু অক্ষর চার অক্ষর
সেঁধিয়ে যাচ্ছে পেটে চুল্লুর মতন
মদের দোকানও হেসে ওঠে
হা মাতাল, হো মাতাল বলে
বুক চাপড়াতে থাকে শুধু
আত্মাকে হরি শা মার্কেটে বেচে দিয়ে
মাতাল উলঙ্গ হয়ে যায়
তারপর হু হু করে কেঁদে ওঠে রাস্তায় রাস্তায়
বধির ফোনেরা হাসে
শুনতে পাচ্ছে যেন কী না জানি গভীর সংবাদ।
বি না য় ক ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
স্বতঃসিদ্ধ
বলার কিছু নেই;
এগিয়ে যাও, দেখতে পাবে
পর্দা সরালেই।
সরাতে পারছ না?
কী করে আর পারবে বলো,
পর্দাটা তো সত্যি নয়, আঁকা;
দেখলে যাতে সত্যি মনে হয়
সত্যি করে সত্যি মনে হয়
তোমাকে তাই মাইনে দিয়ে রাখা...
স ন্দী প ন চ ক্র ব র্তী
লোকে ভাবে
শ্রাবণ শরীরে এসে গোঁয়ার মোষের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে
রক্তের রেখার মতো ধুয়ে গেছে লালমাটি, শালের জঙ্গল
শব্দের স্ফটিক ভেঙে হরিদ্রা বর্ণের আলো খুঁজেছে রাক্ষস
প্রতিদিন বাড়ি ফিরে এসেছে সে
আমাদের কণ্ঠনালী ভেদ করে রক্ত খাবে বলে
এই সাদা পাতা এই থার্মোমিটার
আমাদের জ্বর খেয়ে রক্ত খেয়ে ফুলে ওঠে
লোকে ভাবে, কবিতা লিখেছে
ও বা য়ে দ আ কা শ
গগন ঠাকুর : গণিতজ্ঞ
গগন ঠাকুর গণিতজ্ঞ ছিলেন
লিটল ম্যাগাজিনের দুর্মূল্য খাঁচায় তার নাম
যাদুঘরের প্রহরী-বেষ্টিত উজ্জ্বল হয়ে আছে
জীবনে প্রথম তিনি ভাষাবিজ্ঞান থেকে নেমে
লোকসংস্কৃতির দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন রিক্সার চাকা
তারপর নাটক সরণির মুখোশের কেনাবেঁচায়
গণিত বিষয়ে সবিশেষ আগ্রহী হয়ে ওঠেন
এবং যে কোনো বাহাস কিংবা প্রথম প্রথম কবিতার খাতায়
ব্যাকরণ থেকে জ-ফলা কিংবা নৈতিকতা থেকে ঐ-ফলা ছিঁড়ে
বাতাসে উড়িয়ে দিতেন বলে
একদা এ্যান্টি এশটাবলিশমেন্টের কয়েকজন তরুণ কর্মী
তাকে গভীর উৎসাহে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়
বলে, যে কোনো স্কুলিংয়ের নির্জনতায় জনসভার উত্তেজনা
কিংবা কফি হাউসের ছায়াতলে সরাইখানার পরাপাঠ
রটিয়ে দিতে পারলেই তবে মুক্তি
কোনোদিন মুক্তি নেননি গগন ঠাকুর
বরং দীর্ঘ কারাবাস কালে তিনি এ্যালজ্যাবরার প্লাসগুলো একদিকে
এবং বন্দিজীবনের নিঃসঙ্গতা ও অপ্রাপ্তিগুলো একদিকে রেখে
প্রতিদিন ঘুমোতে অভ্যস্ত ছিলেন
একদিন যোগের সঙ্গে ভাগ এবং নিঃসঙ্গতা ও অপ্রাপ্তির সঙ্গে
গুণীতকের গভীর সখ্যের দরুন ওরা মধ্যরাতে হাত ধরে পালিয়ে চলে গেল
অথচ তিনি প্লাসের সঙ্গে মরালিটি এবং
মাইনাস ও একাকিত্বের সঙ্গে হিউম্যানিটির সমন্বয়গুলো
গভীর কাছ থেকে ভেবে এসেছিলেন--
গগন ঠাকুর গণিতজ্ঞ ছিলেন। এ-মতো গাণিতিক সমস্যা
জীবনে এটাই প্রথম বলে তার মীমাংসা হেতু
নতুন কোনো লিটল ম্যাগাজিনের খাঁচার দিকে তাকিয়ে আছেন
বে বী সা উ
গান লেখে লালনদুহিতা
সমস্ত ভাসাও জেনে পেতে দিই ভোরের আজান
আমিও পথিক যেন অনন্তের জমে থাকা গান
এই মৃত্যু এই আলো ক্ষণে ক্ষণে ভেসে ওঠা শোক
দিনরাত কারুকাজে লিখে ফেলে পদাবলী শ্লোক
ভেঙেছ রাতের গান চারিদিকে নিশিডাক কাঁদে
কেন যেন কার ঘরে পেতে ধরা প্রতিমার ক্ষিদে
একে একে বের করে পুঁথিপত্র। ইস্তাহার। শেষ
জমানো আলোর নীচে ছাইভস্ম মাখে দরবেশ
যে গান রাতের শুধু মন্ত্র পাঠে বাজে শীৎকার
বিসর্জন ভেবে দেখি গানচোখে জমা শোক তার
আসলে বিচ্ছেদ দৃশ্য পথে পথে রাজার মতন
লিখে ফেলে মহাকাব্য শোকগান আর জন্ম ক্ষণ
সুজন তাকেই বলি হাতে হাত বাষ্প পেতে ধরে
তুমিও সহজ জেনে পাটাতন লিখেছ নিবিড়ে
দী পা ন্বি তা স র কা র
পাথরের দিনরাত
নক্ষত্রের পথ দুলে দুলে ওঠে তার কন্ঠ বরাবর
প্রতি শ্বাসে অতিকায় মূর্তি দেখি, প্রতিমার খড়
মাইল মাইল সাঁকো আর হাওয়ার কিছুমাত্র ক্ষত
ডুবুরির চোখ থেকে খসে পড়া রাত কি সম্মত?
পাথরের দিন রাত স্তব্ধতার মত কেঁপে উঠি
পাথরের দিন রাত স্তব্ধতার মত কেঁপে উঠি
সে যত বধিরপ্রিয়, ধুলো ভরা মুঠি
বায়সবিকেল জুড়ে গানখানি সত্যি হোক তবে
আহা দূর মায়া চোখ আঁকা ছিল গর্ভঅসম্ভবে!
আহা দূর মায়া চোখ আঁকা ছিল গর্ভঅসম্ভবে!
দেহস্রোতে নতমুখ ডুবে যাই সেই রাত্রি শেষে
কণ্ঠ যদি ওঠে দুলে জন্মজরা বিষণ্ণ আশ্লেষে
প্র সূ ন ম জু ম দা র
একা
অশ্রুবিন্দু প্রধানত পাখি।
নিবিড় একাকী।
স্তব্ধতারা নিঃস্বতা কাঙাল।
আঘাত? না না- আঘাত? ফাঁকি।
কথার চালাকি।
দূর থেকে দূর থেকে আরো দূর যাওয়া।
যাওয়া।
নিবিড় একাকী।
গাছ থেকে গাছ থেকে অন্যতর গাছে
উড়ে যায় পক্ষহীন পাখি।
আবার একাকী।
প লা শ দে
প্রেগন্যান্সি
কেউ অস্হির নিয়ে কথা বললে
আমি তোমার দিকে আরো হরিদ্রাভ হয়ে যাই
#ঘূর্ণন ঘূর্ণন আন্দোলন গুঞ্জরিয়া ওঠে
#পুরুষে বরশি বাঁধা
ভৈরবী চক্রাকার
#মধুচক্র নিয়ে কেমন সাইরেন বাজে
দ্যাখো চারদিকে
#তুমি তো মশারি টাঙিয়েই শুতে যাও
দেখি, মাঠে ছাদে শূন্যতায়
#পুলিশ আসে কবি আর যত ভ্রমরীয়া
#ঘূর্ণন ঘূর্ণন আন্দোলন বাঁশি বাজাচ্ছে
#মাটি উপুড় করে আজকাল প্রেগন্যান্সি
টেস্ট করা হয়, তুমি, জানো?
পৃ থ্বী ব সু
ডিপ্রেশন
১
একাকীত্বের দিন তুমি ধোঁয়া,
কীভাবে যে উঠে আসো! চারিদিক ঝাপসা
হয়ে যায়...
মাথা ঝিমঝিম করে, পা টলে- আর
হলুদ বিবর্ণ সব ফিল্টারের মত
দিনক্ষণ পড়ে থাকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে
২তোমার জীবন থেকে যে কারণে সরে যেতে হল
যেখানেই ছায়া দেখি, অধিকারবোধ জেগে ওঠে।
ইদানীং স্নানঘর, সারাদিন একটানা শিস,
জলের তফাতে আমি কবেকার পুরোনো কাঠামো
জলের গভীরে যেন জমা পলিমাটি আমি, একা
ব্রেলঅক্ষর
যে, কোনো সূর্যাস্তে আমি প্রার্থনারত অন্ধঠাকুমার কাছে চলে যাই ;
সম্পূর্ণ শোকের মতো এই জীবন তোমারই পথের ফুল চেয়ে
নিবিড় পথিক…অস্থিরতার গোপনে ভাসিয়ে দিয়েছে নিজেকেই…
আর সর্পগন্ধার-মূলে উচ্চরক্তচাপ কমানোর কৌশল কোনো
ত্যাগের আশ্রমে আমাকে নিয়ে যায়…ভাবি, যযাতি
আমার তীর্থ বাকিসব ভুলে যাওয়া ইমনের কল্যাণ…
কোনো এক গঞ্জের রাতে আমার দাদুর মতো মুগ্ধ তথাগত
শরীরের মূত্রে পাওয়া ইউরিয়াধারা ক্ষেতের জমিতে ঢেলে দেয়
কোনো কোনো শোকে আর সন্ন্যাসে ভিটামিন এ- এর অভাবে
কৃষকেরা রাতকানা হয়
আকাশের তারারন্ধ্রগুলি চোখে প্রবেশ্য আলোর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে…
আমি সব অসহ্য অতিক্রম করে ছুটে যাই অন্ধ ঠাকুমার
কাছে জুঁইভরা অশ্রুর মতন !
ঘোড়ার আদিমপুরুষ ইওহিপ্পাসের সাথে ভাগ করে নিই সামান্য উঠোন…
বাড়ি ফিরি মাঝরাতে । এলোমেলো যেখানেই যাই
একটা অদৃশ্য হাত আমার পিঠ ছুঁয়ে থাকে…
উজানমণির খোলা তটে চিরবিস্ময় দাদু
স্বভাব বালকের মতো প্রতিবর্তক্রিয়ায় সাড়া দেয় আজও
আমার অগ্রন্থিত ব্রেলঅক্ষরে লেখা কবিতা উদাসী কবিতায়
নির্দেশক
ভুলে গিয়েছেন কিংবা অনুভবে রেখেছেন তুলে।
নিয়ন আলোর দিন।
অবসন্ন ভীরুতা আর ক্যামোফ্লাজিক গন্ধে অসহায় হয়েছে সেই মুখ,
যার নামে মৃত্যু রচিত হয় পরপর।
হে মহানুভব,
আপনি তাকে চেনেন?
টি ঙ্কু ঘোষ
আব্বাসুদ্দিন শোনা ভাই
কবিতা এমন জিনিস, লিখে যেতে হয়। থামলে চলে না। অনেকটা ঘড়ির মত ঠিক হোক ভুল হোক টিকটিক শোনাও সময়। আমরা তো চিরকাল এই নিয়ে উৎসাহ হুল্লোড় কাটিয়ে দিলাম প্রভূ তোমার জন্মদিনে নেত্য করিনি বলো প্রার্থনা করিনি বলো বাবারও মৃত্যুশয্যায়! এইবার থামুন তো। থাম লাঞ্ছনা আছে? আমার পেনের মুখ আমি জানি কালি মাখা এবং সত্যেরও কাছে।
অন্ধকারের কবিতা
ফাঁকা হলেওতো ঢোল বাজে
তবে মাথা বাজলে দোষটা কিসে ভাই!
তুমি তো শব্দই শুনতে চাও
ভোর থেকে আরতি অবধি,সন্ধ্যা শেষ,,,
শেয়াল হাওয়াও,,,
অন্ধকার বাড়ির মতন আগোছালো
রঙিন দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছি আর
চোখের সামনে অন্ধকার নিয়ে দাঁড়িয়েছি যেই
দেখি তুমি, চিত হয়ে শুয়ে আছো অন্ধকার
বাজাও আমাকে, আমি কতখানি ভূত
বাজাও আমাকে, আমি কতটা রাক্ষস
আমাকে বাজিয়ে দ্যাখো, আমি পুরোষই বা কতখানি
অন্ধকারে খেজুর গাছের মতো
ঠিলের ভিতরে ঢালি রস।
ফাঁকা হলেওতো ঢোল বাজে
তবে মাথা বাজলে দোষটা কিসে ভাই!
তুমি তো শব্দই শুনতে চাও
ভোর থেকে আরতি অবধি,সন্ধ্যা শেষ,,,
শেয়াল হাওয়াও,,,
অন্ধকার বাড়ির মতন আগোছালো
রঙিন দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছি আর
চোখের সামনে অন্ধকার নিয়ে দাঁড়িয়েছি যেই
দেখি তুমি, চিত হয়ে শুয়ে আছো অন্ধকার
বাজাও আমাকে, আমি কতখানি ভূত
বাজাও আমাকে, আমি কতটা রাক্ষস
আমাকে বাজিয়ে দ্যাখো, আমি পুরোষই বা কতখানি
অন্ধকারে খেজুর গাছের মতো
ঠিলের ভিতরে ঢালি রস।
অ নি মি খ পাত্র
একটা লেখা
একটা লেখাকে আর কতদূর সহ্য করা যায়?
তার চে বরং ভাল দুমদাম শরীরস্থাপন
যতেক গভীরবাসা বর্ণনায় নষ্ট হয়ে যায়
ব্যথা নীল, রাগ লাল, সোনালি আশার
কী রঙ সহ্যের? সে প্যাস্টেল নাকি আক্রিলিক?
তার ক্যানভাস বড়ো। তার শৈলীর নাম মুহুর্মুহু
সে বড়ো অসহ্য। তার চাপ
খুবলে নেয় আত্মজীবনীকে
কতদূর সহ্য করা যায় ভাই একটি লেখাকে?
তা নি য়া চ ক্র ব র্তী
প্রলাপ
এইসব এখনো হয়
এখনো বহুদিন পেয়ারা গাছের দিকে তাকিয়ে
শরীরে জ্বর আসার কথা ভাবি,
তাপের যে উত্তম শোষক
সেই তাপের উত্তম প্রতিফলক!
শুধু জায়গা বদলের খেলা
মানুষের সাহস দেখে ইতি-উতি হাসি পায়
গোটা জীবনের জ্বর দেহস্থ হলে
পৃথিবীকে ভালবাসার উনুন ভাবতাম
একানরে ও তার গল্প এখন খুব পূর্ণ লাগে
এসব রোদছোঁয়া অবশ দুপুর
জীবনকে বালিতে ফেলে
বাদামের খোসা ওড়ানোর মতো
নশ্বর দেহকে এত কাহিক করেছি কেন?
ভাবলে কবিতা নয় সুস্থ প্রলাপ আসে খুব---
দী প্তি প্র কা শ দে
ক্ষত
একদিন
ঘুম থেকে উঠে খুব ভোরে
আঙুলের ছাপ খুঁজতে বেরুব আমরা
খালি পায়ে
যে-যার নিজের শহরে
তারপর সেইসব ছাপ বুকে নিয়ে
বুনো রোদে শুকনো করে, আগুনে পুড়িয়ে
লিখে ফেলব সময়, যা আসলে বিগত...
রক্তে যাদের আজও অভিকর্ষ-টান
আর
গোড়ালিতে থেকে গ্যাছে পেরেকের ক্ষত!
স্রো ত স্বি নী চ ট্টো পা ধ্যা য়
প্রেমিক
না পাওয়ার জঠর থেকে
তৈরি হচ্ছে একটি তমস্যার আখ্যান
এখন ধীর গতিতে পাশ কাটিয়ে চলে যায়
দু একজন যুবক
এই প্রগাঢ় অন্ধকারে সেই একটি দুটি মুখ
পরিচিত মনে হয়
মনে হয়, কবে থেকে যেন
কিসের এক ঘোর
আমায় দ্বিধাগ্রস্ত করে তুলছে
আমি সঠিক নির্ধারণ করতে পারছি না বলে
ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছি ব্যপক আকুলতায়
আর তুমি শিকারি কুকুরের মতো
আমায় খুঁজে বেড়াচ্ছ
আমার ঘ্রাণে গা শুকিয়ে নিচ্ছ প্রতিনিয়ত
অথচ সন্ধ্যা নামলেই
যে অপলক দুটি চোখ তাড়া করে
নিয়তির শীর্ষবিন্দুতে বসিয়ে দেয় তোমায়
তুমি তাকে আজীবন ভয় পেয়েছ
মন্ত্র আওড়েছ
এই শাশ্বত পৃথিবীতে
একমাত্র তোমার যেন কোনও ক্ষতি না হয়
অ র্ণ ব চৌ ধু রী
গোলাপ গর্ভের পাখি
আমি সে জন্মের কারিগর, গর্ভ থেকে ফুল খুঁটে খুঁটে উড়িয়ে দিয়েছি পাখি – বহুদিন পর দেখি পড়ে আছে ফুলের উপমা- আমি সে প্রেমিক ভিক্ষু হাতে ধরি গোলাপের থালা , ছোট উপহার, চুলের বাহার আরও সব মুখরা নিয়ম –ছুটে যাই পদ্ম সরোবরে –তুলে আনি রতিপ্রিয় নারী- বাতাসে মাটির গন্ধ । এসো হে সুন্দর , বাতাসের গায়ে লিখি চক্ষুশূল ময়ূরের নাচ- অলীক কাহিনী ছুঁয়ে মেঘমালা চলে যায় নৈশ অভিযানে- আজ তারা তারা আলো জ্বালিয়েছে কেউ- আলোর দুপাশে লাট খায় নেশা ধরা অর্ধভুক্ত চোখ, আমি সে চোখের পালক তুলেছি আর উড়িয়ে দিয়েছি নীচু মুখে- মায়াবী দীঘির মাঝে- ভোরের শিশিরে- লন্ঠন নাচানো ছাদে, এসো হে সুন্দর, জন্ম ছেনে মেখে নিই উপচে পড়া নরকের জল- সমস্ত অভিসন্ধির মতো পড়ে থাক তোমার প্রকাশ
শা শ্ব তী সা ন্যা ল
নৌকো
নৌকোটি এখনো ভাসছে মোহনা ছাড়িয়ে স্থির জলে
অভিমানী নোঙরের নীচে কাঁপে বিষাদের মেঘ
নৌকোটি এখন আর তেমন যুবক নেই ব'লে
শিকড়ে বয়স বাড়ে। ভেঙে দেয় জলজ আবেগ
মাঝির শরীরে রোদ, সেই তার লজ্জানিবারক
এসো রোদ, পা ঝুলিয়ে বসো এই ভাঙা পাটাতনে
কবে কোন কুমারীর নরম হয়েছে আলতাদাগ
রঙ ধুয়ে গেছে, স্রোত রাখেনি সেসব কথা মনে।
স্রোত, তুমি কোথা হতে আসিতেছ? কোন দিকে যাবে?
সে কোন মুনির জটা, শিশুকাল- মনে কি পড়েনা?
কে তোকে ভাসিয়ে দিলো? মানতের মেয়ে... এ বয়সে
নরম প্রবাহ নেই, আশরীর ফেনা আর ফেনা
নৌকোর পাঁজরে তবু লেগে আছে কুমারীত্ব, ঢেউ
জলজ সে উপকথা মাঝি জানে, জানে কেউ কেউ...
চ য় ন ভৌ মি ক
ছাইগাদা
বাবা যখন জল পাম্প করছিলো
বাইরের টেপা কল থেকে ।
সি আর পি এফের গুলিটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে ঠিক তখনই
থাম ফুটো করে থেমেছে ভিতরে
ক্ষতচিহ্ন রেখে।
সত্তরের সেই শীতের রাতে জন্মাইনি আমি,
কিন্তু চোখ বন্ধ করলেই যেন
ভারী বুটের শব্দ পাই, কেঁপে উঠি
সেইসব বর্ণিত সন্ত্রাস এখন আমারও চোখে।।
অ রু ণা ভ রা হা রা য়
দেরি
তোমাকে স্কুলের ড্রেসে কখনও দেখিনি৷
তোমার কলেজ-বেলা: সেটাও অজানা
এত পরে কেন এলে আমার গভীরে?
অফিস ছাড়ার দিন কথাও বলিনি!
ঈষৎ তাকানো-মুখ মনে পড়ে তবু...
আজ এই অনুতাপে গলে যায় পাহাড়ি বরফ
আরও আগে দেখা হলে
হতেও তো পারত বলো, প্রেম আমাদের...
অথচ নামের কোনও দায় নেই--- শব্দটুকু ছাড়া…
রি য়া চ ক্র ব র্তী
আগুন নদী
সময়ের আলিঙ্গনে
মুহুর্মুহু শিহরিত।
আমিই ভরা বর্ষায়
অভিমানে ছলকে ওঠা নদী ।
হাতের মুঠোয় নেচে ওঠে
আমার রুক্ষ্ম সময়
আলো নই, অন্ধকারও নই
আমি সেই আগুন নদী
ছুঁয়ে এসেছি
সুদুর দক্ষিণ
গৌ র ব চ ক্র ব র্তী
দায়হীন
অথচ কথার কোনও দায় নেই শুধু আয়োজন
যে পথ ছেড়েছি সেই পথে, বাঁকে কখনও পাবে না
ধুলোর গন্ধ নেই আলোও স্বধর্ম থেকে চ্যুত
কতো আশকারা দেব? আর কতো লাই দেওয়া যায়?
যতোটা জেনেছি ভালো... যা কিছু জানি না, শ্রেয় বেশি
গোধূলির গায়ে ক্ষত চোখ তাতে মলম লাগায়
দূরত্ব খানিক বাড়া ভালো তবু কাছে এলে ক্ষতি
সময় খারাপ হলে প্রেম কোনও কাজেও আসে না
আমরা দুজনে চলো দূর থেকে চোখে রাখি ভ্রম
এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে ঢুকে যাবে গলা দিয়ে শ্বাস
তোমার নামের দলা উঠে এলে ঢোঁক গিলে ঢাকি
অথচ নামের কোনও দায় নেই--- শব্দটুকু ছাড়া…
সৌ মা ভ
জ্যৈষ্ঠের কবিতা
১।
আমার পরজন্মে লেগে পাকা জ্যৈষ্ঠের রঙ,
হাতপ্ত রাস্তায় দাউদাউ গিরগিটির শ্মশানরঙের
লাল চোখের মত ফনীমনসার ছায়াযুদ্ধ, যেন
গ্রাফিক নভেলের পরাজিত সৈনিক।
২।
গ্রীষ্মের কাছে রঙ ভিক্ষে চায়
এশিয়ান পেইন্টসের উজাড় কৌটো,
হসপিটাল বেডে ভর্তি জলের শ্রাবণ শৈশব,
অনেকটা রোদ চুরি জামার কোষ, ব্রেণের পকেটে,
রোদ ভাঙ্গার খেলায় ভাঙ্গে আগুনের জলঅক্ষর
৩।
উনুনে দুপুর ধরিয়ে দিল ফারেনহাইট জ্বলনাঙ্ক,
পুড়ছে বুরবক জ্যৈষ্ঠের ঈশ্বর-নাভি, আর
একে অপরের উচ্চতা ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে,
জ্বরের ভিতরে মেঘনাম জপতে জপতে আমরা
কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস জন্ম পেরিয়ে যাই।
রি য়া চ ক্র ব র্তী
আগুন নদী
সময়ের আলিঙ্গনে
মুহুর্মুহু শিহরিত।
আমিই ভরা বর্ষায়
অভিমানে ছলকে ওঠা নদী ।
হাতের মুঠোয় নেচে ওঠে
আমার রুক্ষ্ম সময়
আলো নই, অন্ধকারও নই
আমি সেই আগুন নদী
ছুঁয়ে এসেছি
সুদুর দক্ষিণ
দে ব রা জ চ ক্র ব র্তী
সহ্য ক্ষমতায় – ১১
তোমাকে ছোঁয়ার আগে অন্ধকার এসে
পায়ের তলার মাটি নিয়ে চলে গেছে
সরে গেছে সমস্ত পথ,
রাত্রি দূরত্ব বোঝে
জোনাকি পোকারাও
সুতো টেনে ধরে রাখা সম্পর্কের মতো
ক্রমশ আরো নীল হতে হতে
উনুনের ধোঁয়ায় মিশেছে…
আমার দিগন্তরেখা
খুঁজেছো সন্ধ্যারতিতে
অক্ষর, লেখার ইতিহাসে?
Comments
Post a Comment