Skip to main content

তদোগেন গিরতে এবং উনগারেত্তির কবিতার অনুবাদ

তদোগেন গিরতের কবিতা
অনুবাদ স ব্য সা চী সা ন্যা ল

তদোগেন গিরতে পেশায় শিক্ষক। মঙ্গোলিয়ার ওন্দোরহান বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পারেটিভ লিটারেচার পড়ান। কবিখ্যাতি সেভাবে নেই। কোনো প্রকাশিত বই নেই। সময় কাটানোর জন্যই লেখালিখি করেন। তাঁর নিজের কথায়; “কবিতা নিয়ে সেরকম কোন অ্যাম্বিশন নেই। তাছাড়া আমার লেখাগুলি যে আদৌ কবিতামঙ্গোলিয়ার কোন দৈনিক বা পত্রিকা সে কথা স্বীকার করে না।
*তদোগেন গিরতের কবিতা - ১

আমি নোংরা মেয়েদের কাছে যাব
কাঠের নথ নিয়ে যাব
আমার বাহুর মাংসে গিঁথে গোবি ভাল্লুকের দাঁত
আমার কোন নিষেধ নেই
আমি নোংরা মেয়েদের মুখের ভেতর
ঘুরে দাঁড়াচ্ছিআর কাঁপছি
কোঁচকানো মুখের চামড়া টান করে দিচ্ছি
আমার কোন নিষেধ নেই

ঘাসের মধ্যে উঠে দাঁড়াচ্ছে সারস
ওর চোখের পাতা লাল
ওর পিঠের রঙ কালো
চকচকে দুই দাবনার মাঝে সবচে মিষ্টি ওর পুটকি

*
তদোগেন গিরতের কবিতা- ২


আমার নাম তদোগেন গিরতে
তদোগেন গিরতে বলে কেউ নেই
আমার বৌ দুশ্চরিত্তির
আমার বৌয়ের বোঁটা খুঁড়ে দিয়ে যায় কাক

আমি স্তেপ পেরিয়ে আর নদী পেরিয়ে
নোংরা মেয়েছেলের কাছে যাই
আর দেখি ওর বিছানায় রাত্রি
আর দেখি ওর বিছানায় দুপায় রাত্রিকে জড়িয়ে
বনশুয়োর

আমার বৌ দুশ্চরিত্তির
আমার বৌ বলে কিছু নেই
আমি নোংরা মেয়েছেলের কাছে যাই
পুরো মঙ্গোলিয়ায় কোন নোংরা মেয়েছেলে নেই।

*
তদোগেন গিরতের কবিতা- ৩


সে সারাদিন তাইমেন মাছ কাটে
উবু হয়ে বসে ট্রাউট কাটে
ওর তলপেটে মাছের গন্ধ
আমরা দিনের বেলায় করি,
করার পর আমার তলপেট মাছ হয়ে যায়

রাতে যখন চিকচিক করে জল
আমার তলপেট বরফজলে সাঁতরে বেড়ায়
সে ভোরভোর তাকে খ্যাপলা জালে ধরে
আর কেটেকুটে বরফের ওপর রেখে দেয়

*
তদোগেন গিরতের কবিতা- ৪


আমি পাল্লা বেড়ালের ধুমসো লোম
থেকে শব্দ বাছি
আমি আর্গালি ভেড়ার পেট কাটতে কাটতে
শব্দ তুলে আনি
আমি তথাগতর সামনে ধুপকাঠি জ্বালি
আর প্রার্থনা করিদেবতা আমার একটা গান হোক
পপলার বনে পাতা নড়ে
গাঁয়ের বাইরের টিলায় লাল রং ধরে
আমি তুষার চিতার পায়ের ছাপ থেকে কান্না ছেনে তুলি
আর আমি শব্দ খুঁজতে উলান বাটোরে
মায়া খুঁজতে জুয়ার টেবিলে
আমার ভেড়ার চামড়ার ডিল শব্দে ভরে ওঠে
আমি তদোগেন গিরতে শব্দর পাশে শব্দ সাজাই
আর তাকে কম্বলের তলায় নিয়ে শুই
তার দুপায়েরফাঁকে উংলি করি
আর সে গানে সুর বসে

সেই গান সারাজ্যোৎস্না বরফের ওপর হেঁটে বেড়ায়
খুব ভোরে উলান বাটোরের রাস্তায় তার পায়ের ছাপ দেখা যায়
---

অনুবাদকের নোটঃ (ডিল=মঙ্গোল ট্রাডিশনাল পোষাক)
*
তদোগেন গিরতের কবিতা- ৫


তথাগত তিনি করুণাময়
তথাগত তিনি তাঁর হাতের ছপটি
গুণেগুণে তিরিশবার আমার দাবনায়
তাঁর মূর্তির সামনে সে আমার ওপর উঠে পড়ে
আর করে আর করে আর করে
তার বোঁটা থেকে নুন বেরোয়
অথচ সমুদ্র এখান থেকে চারশো মাইল পুবে
চীনের জিনঝৌ আমি তদোগেন কখনো যাইনি
আমি এক বসন্তে ম্যানহাটানে গেছিলাম
নিউ ইয়র্কের মেয়েরা আমার ভাষা বুঝতে পারেনি
ওরা আমার পিঠেরদাবনার কালসিটে দেখতে চেয়েছিল

নিউ ইয়র্কের মেয়েদের রঙ বেগনী ওদের চুলের রঙ সবুজ
ওদের বুকে নুন নেইতথাগত ওদের করুণা কর

*
তদোগেন গিরতের কবিতা- ৬


আমি বল্লমে শান দিই
আমার মা হাড় ছাড়ানো বুদগের পেটের ভেতর
আরুলে মাখা টুকরো টুকরো ভেড়ার মাংস ভরে
ভেড়ার চর্বিতে খুশুর ভাজে
আর খসখসে গলায় গান করে
ধোঁয়া বেয়ে বেয়ে সে গান আকাশে উঠে যায়
সে গানের গন্ধে ঈগল ঝাঁপিয়ে পড়ে
আর ছিনতাই করে ভেড়ার মুন্ডু

সব্বার গান থাকে
বরফের নীচে মাটির একটা ঘুমঘুম গান
আলতাই পাহাড় আর আকাশের একটা দেখাশোনার গান
নদী আর নদীর মধ্যে থেকে শ্বাস নিতে ওঠা পাথরের গান
হাড়ের স্তুপকে আরপার করা বাতাসের একটা গান

সাম্পার পাঁজর থেকে
বেরিয়ে আসা গান
আমার বল্লমের ডান্ডায় থরথর করে
---
অনুবাদকের নোটঃ (বুদগ= একশ্রেণীর বড় কাঠবেড়ালি বা Marmot, আরুল= দইখুশুর= ভাজা ডামপ্লিংসাম্পা=নেকড়ে)

*
তদোগেন গিরতের কবিতা- ৭


কে আর কাকে চেনে তদোগেন?
কন্দ কি চেনে তার উদ্ভিন্ন পাতাদের?
আমি তোমাকে কীইবা দেব?
চিরুনি বুলিয়ে দেব কাকচুলে
চিরুনি বুলিয়ে দেব ছাইচুলে
জট ছাড়িয়ে দেব
উকুন বেছে দেব
আর কালকের সবুজপাতা
আজকের হেমন্তে মাটিকে চিনলো

উটগুলো কুঁকড়েমুকড়ে বসে আছে
ওদের ছায়ার মতিগতি আমি বুঝতে পারি না

*
তদোগেন গিরতের কবিতা- ৮


আমি তোমার হারিয়ে যাওয়া চিন্তা
তুমি যখন দোরগোন হ্রদে ছিপ ফেল
আর বইয়ের শিরদাঁড়ায় হাত বোলাও
আনমনে আমি ঘাসের ওপর পাতা
কম্বল থেকে ছারপোকার মত উঠে আসি
৩৯-এএকলা জাপ সৈন্যের ক্ষমাপ্রার্থনার মত উঠে আসি

ওন্দোরহানের রাস্তায় আমি পিক-আপ চালাই
বার্চবনে পাতা উড়িয়ে যাই
তোমার থেকে এখন আমি ৫০০ মাইল দূরে
৭০০ মাইলের দিকে যেতে যেতে
পায়ের ফাঁকের শিরশিরানি ভাঁজ করে রাখি

আমি তোমার হারিয়ে যাওয়া চিন্তা
তোমার চেয়ে কেইবাভালোজানে
যৌনতা ভাঁজ করে রাখলে বই হয়ে যায়

*
তদোগেন গিরতের কবিতা- ৯


ঐ ছাই জিন্স আর বম্বার জ্যাকেটের
ছোকরা আমার কবিতা পড়ে না
ঐ নীল স্ট্রোলে রেশমি প্যাটার্নের
মেয়েটা আমার কবিতা পড়ে না
ঝানু তিরকিত আর তার আম্মা
আমার কবিতা পড়ে না

পীন বুকের কিরঘিজ ছুঁড়ি আদেলেত
সে ঘুড়ীর দুধ দোয়ায়
সে ঘুড়ীর দুধ গেঁজিয়ে আইগার বানায়
আমি সময়ে হেলান দিয়ে সাদা টোকো আইগার খাই
আর সকাল থেকে জোছনা অব্দি নেশা করি
কুচুটে ছুঁড়ি আদেলেত আমার কবিতা পড়ে না

আমি যেন সেই নিরক্ষর গান
মানুষের স্মৃতির মধ্যে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে
মানুষ হয়ে গেছি

আকাশ থেকে আমায় পেড়ে
মগজ থেকে আমায় পেড়ে
কেউ আর শুদ্রাগায় বসাচ্ছে না
---
অনুবাদকের নোটঃ (আইগার= ঘুড়ী (Mare)-এর দুধ থেকে প্রস্তুত মদ।শুদ্রাগা= তিন তার বিশিষ্ট বাজনা। জাপানি বাদ্যযন্ত্র শামিসেন-এর সাথে মিল আছে)


অনুবাদকের জবানিঃ
১৯৯৪আমার তখন ২১। মানুষের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেললাম। ২১ বছর যতটা বিশ্বাস পুষতে পারে আর যতটা হারাতে পারে ততোটাই আর কি। সঞ্জীবসঞ্জীব ভক্ত গোলগাল ছোট্ট মানুষ মডার্ন বেকারি পেরিয়ে এক ভাড়া ঘরে থাকত। তার একতরফের প্রতিবেশী এক ছুকরি বেলজিয়ান আর অন্যতরফে এক মঙ্গোল বালক। সঞ্জীবএকদিন হাঁফাতে হাঁফাতেএসে অনামিকা বয়েজ হোস্টেলে সত্যর ঘরে সান্ধ্য আড্ডায়চোখ বিস্ফারিত —“জানো সব্যদা সমস্ত মঙ্গোলিয়ানদের পাছায় একটা করে নীলদাগ আছে।মঙ্গোল বল্লো এইমাত্র”, চীনাজাপানিকোরিয়ানদেরও তাই। সে দাগ নাকি খোদ তেমুজিনের স্মৃতিসারা পৃথিবীর তেমুজিনের বংশের উত্তরাধিকার। এরপরও মানুষে বিশ্বাস রাখা যায়জেনেটিক ডাইলুশান বলেও কি কোনো জিনিস নেইতোসেই নাম না জানা মঙ্গোলের নাম হয়ে গেল নীলদাগ আর করোলারি হিসেবে বেলজিয়ান ছুকরির নাম লালদাগ।
১৯৯৮-এ আমি যখন কোরিয়ায়তদোগেন-এর সাথে দেখা। মদ খেতে খেতে ঠাট্টার ছলে বলেই ফেললাম। তদোগেন সিরিয়াসলি বলল—“সেকীতুমি দেখনি?” পরের দিন ডর্মিটরির কমিউনাল শাওয়ারে স্নান করতে করতে প্রথম বারের মত চারিদিকে চোখ বোলালাম। কী আশ্চর্য্য! সাদা তীব্র স্টেরাইল আলোয় কোথাও সাবানের ফেনা ভেদ করেকোথাও জলধারা ফুঁড়ে সারি সারি কালসিটের মত নীলদাগ! সেই আবার মানুষের ওপর বিশ্বাস করতে শিখলাম২৫ বছর বয়সে যতটা বিশ্বাস করতে পারা যায় আর কী।

তারপর থেকেই তদোগেন-এর সাথে একটা সখ্য। মদগানকোরিয়ান রকব্যান্ডের সাথে এখানে সেখানে। তদোগেন মান্দারিন জানেরাশান জানেকম্পারেটিভ লিটারেচার পড়তে এসেছিল। কোরিয়ানও শিখে নিয়েছিল। আমার চেয়ে বছর ৬-এর বড় তদোগেন শান্তধীরমদ খেয়েও চুপ। বুধাবলে ডাকত কিম ইয়ং জুনরকব্যান্ডের রাজা! কবিতা লিখত তদোগেনকোনোদিন শুনিনিইংরেজি জানতনা। কোরিয়ান ভাষায় কবিতা বোঝার এলেম আমার ছিল না। ২০০২-এ যখন সে দেশ ছাড়িতদোগান তখনো কোরিয়ায়। আর তারপর জীবন। ১৩ বছর পর২০১৫য় ইয়ং জুন এর কাছ থেকে মেল অ্যাড্রেস নিয়ে যোগাযোগ করে তদোগেন। তদোগেন এখন উলান বাটোর থেকে পুবে ওন্দোরহান শহরে ইউনিভার্সিটিতে পড়ায়। অ্যাদ্দিনে সে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে তার মঙ্গোল কবিতা অনুবাদ করেআমায় পাঠায়আর আমি তাকে বাংলায় তুলে আনি। এ এমন একটা সময় যখন মানুষের ওপর বিশ্বাস রাখব কী রাখব নাএই দ্বিধা নিয়েই দিন কাটে।





গি উ সে প্পে   উ ন গা রে ত্তি র কবিতা



অনুবাদ   হি ন্দো ল   ভ ট্টা চা র্য



বুলেট

শীতের বিকেল যেন, ধূসর কুয়াশা
সে জানে কেমন করে বিঁধে যেতে হয়
চোখের পলকে টাকা, পয়সা, যুদ্ধ, প্রেম
ঝলকে ঝলকে নেমে আসে।

সেতু

বিয়োগচিহ্ন, উদাসীন
হিংসা আর অসহায়তার মধ্যবর্তী
এ পার ও পারে
মুখোমুখি, বোবা।





যুদ্ধের আগে…

পোস্টকার্ডের মত শুকনো মুখ, অক্ষরে মুক্তিকামী
নীরবতায় লেখা ঠিকানার দিকে চেয়ে থাকা
একটি মৃত্যুর থেকে, আরেকটি মৃত্যুর দিকে বেয়নেট বাড়ানো।


আগুন

যে যেভাবে পোড়ে, তাকে সেভাবে পোড়ায়।
নিজেও তো পোড়ে, চিরকাল।
আলো তাকে পোড়ায়, অন্ধকারে।
নশ্বরতা এভাবেই, নিজে অবিনশ্বর হয়ে যায়।




খিদে…

একটা  রুটির জন্য , কফিন নিজেকে বয়ে নিজেই
মাটির ভিতর শুয়ে পড়ে।
একটা রুটির জন্য, মাথায় বন্দুক নিয়ে, দুটি ঠোঁট শুকনো চুম্বন।
একটা রুটির জন্য, শ্বাসরোধী গ্যাসচেম্বার, তুমিও স্বাগত।


প্রেম, লিপস্টিক, সেলাইমেশিন

আমাদের শহরের একটি দোকানে, প্রিয়, বিক্রি হয় মন
তুমিও কিনতে পারো, যে যেখানে আছে, কিনে নাও।
দাম বাড়ার আগে, ঘরে ঘরে জন্ম নিক বাণিজ্যের শিশু।
আমাদের শহরের পয়সা হোক, খেতে পাক  সকল দোকানি।


আয়রনি

যারা নিজেদের মাংস কেটে দিয়েচিল, তারা ফেরত চাইছে অস্ত্র
যেন প্রতিশোধের ভিতর আছে যন্ত্রণার উপশম
থমথম করে ট্রাকবোঝাই বারুদ এসে কড়া নাড়ছে-
আগুন জ্বালাও



 হিংসা

একটি ফুলের মধ্যে দিয়ে চলে গেল যুদ্ধ
পড়ে থাকল পাপড়ি আর পরাগরেণু
তুমি  দেখলে কিছু ঝরা ফুল মাটির উপর
ভাবলে শীতকাল এসে গেছে


সমাধি

তারা প্রাণভয়ে পালাতে গিয়ে খুঁজে পেল একটি সুন্দর দেশ
সেখানে সীমান্ত ছিল না
আর ছিল নীরবতা
কারণ সেখানে জীবিত ছিল না কেউ


ঝড়

সে, তাকিয়ে রইল,
শব্দহীন
দৃশ্য তাকিয়ে রইল
শব্দহীন


নিশানা

গাড়িটা গড়িয়ে গেল রাতের বুকের কাছে থমথম করে-
ছোঁ মেরে শিকার খুঁজল বাজ
সবাই দরজা বন্ধ করল, জানলাও
মৃত্যু নীরবে হাসল, যেন সে সব জানে।

যুদ্ধবিরতি

সাদা পতাকার মত, সে দাঁড়িয়ে রইল কামানের সামনে
তখন গর্জন করছিল প্রতিহিংসা
আর দিবাস্বপ্ন দেখতে দেখতে একজন ভাবছিল-
আবার ভালবাসার কথা।

 সঙ্গীত

সৈনিকের কাছে চকলেটের মত মহান
আর গাছের কাছে হাওয়া
গায়ক তখন শ্রোতার দিকে তাকিয়ে রয়েছে-
শ্রোতা, আকাশের দিকে


হিংসা

সে, অস্বীকার করল কেউ তাকে ভালবাসে
কারণ তার হৃদয়ে তখন বুলেট লেগে আছে
আর সে বুঝতে পারছে –
যে সম্পর্ক হয়নি কখনো, তার মৃত্যুও হয় না।

শাসক

আসলে একটি বুলডোজার, যার ড্রাইভার বদল হয়
রাস্তাও, শুনশান হয়ে যায় আকাশ
আর একটি বাড়ি থেকে জন্ম নেয় একটি যুদ্ধক্ষেত্র

শরত

জানি না বসন্ত আসবে কিনা, ভাঙা শহরে
মানুষ সেঁদিয়ে যাচ্ছে বাঙ্কারে
শুকনো ঠোঁট ভিজিয়ে দিচ্ছে আরেকটি ঠোঁট
ঝরে পড়ছে পাতা, ফুল, হেমন্তের দিকে




সংকেত


তারা আর্তনাদ  করে উঠল,
শান্ত আঙুল রাখল মাটিতে
ঘুরে দাঁড়াল দুর্ভাগ্যের বিরুদ্ধে
যেন বাঘ, একা বেঁচে আছে





Comments

Popular posts from this blog

প্রথম ব্লগ সংখ্যা স ম্পা দ কী য় আবহমান একটি  ষান্মাসিক কাগজ, কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং দার্শনিক সন্দর্ভের। আমাদের মূল উদ্দেশ্যঐতিহ্যের সাথে আধুনিকতার মিশেলে যে সময়খণ্ড আমাদের চালনা করে যাচ্ছে, তাকে অনুধাবন করা। কারণ সমকালীনতার আধার ছাড়া চিরকালীনতার আধেয়কে ধরা অনেক সময় সম্ভব হয় না। আর ঠিক এ কারণেই শাশ্বত লুকিয়ে থাকে ক্ষণিকের মধ্যেই। কারণ আমাদের জীবন ক্ষণিকের ঘেরাটোপে চিরকাল অনন্তসন্ধানী। চেতনাকে চৈতন্যসন্ধানী করে তোলার জন্য এ ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। আর তার জন্য যা প্রয়োজন, তা হল, বর্তমানে টুকরো টুকরো বোধিগুলোকে চয়ন করা। বর্তমান সময়খন্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল তরুণ প্রজন্ম। সেই তরুণদের হাতে, ভাবনায়, কথনে এবং সৃষ্টিতে রচিত হয়ে চলেছে,- যে আবহমান সময়খন্ডের মধ্য দিয়ে তারা চলেছেন,- সেই 'সময়'। সেই সময়কালকে অনুধাবন করতেই এই ব্লগজিন। দুই  বাংলার তরুণ এবং উল্লেখযোগ্য কবি ও লেখকরা নিয়মিত লিখুন এখানে। কবিতা, ছোট ছোট গদ্য, বড় গদ্য- সব। মনে রাখবেন, আমাদের কোনো পার্টি নেই, কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই। নতুন ভাবনা আর নতুন দর্শন তথা ডিস্কোর্সকে আমরা স্বাগত জানাই। একদিনে তো সময়টা

তাঁবু , মই ও শ্রেষ্ঠ কবিতাগুচ্ছ- নিয়ে আলোচনা- আলোচনায় বেবী সাউ

আলোচনা বে বী  সা উ তাঁবু মই আর আমি    একজন সাধক বসে আছেন। নদী এসে ধুয়ে দিচ্ছে         সবুজ রঙ। শান্ত অথচ শান্ত না। ভুল নয় অথচ         ঠিকও না।  নক্ষত্রের পতনের শব্দ শুনতে পাইনি বলে     একা বসে আছে বিষাদের মেঘ। বিষাদের! আনন্দের       তবে। আনন্দম্। ঘন সবুজ সঙ্কেত পেরিয়ে নীল           অসীম ছুঁতে চাওয়া এই আমি কী আমিই! নাকি           জীবনের বাঁকে এসে দাঁড়িয়েছে তারা খসার গল্প।           রূপকথার রূপকে উঠে আসছেন ঠাকুমা। কথক           হিসেবে  তিনিই তখন আমাদের ভাগ্য বিধাতা। রাজপুত্রের জন্ম মৃত্যুর জীওনকাঠি মরণকাঠি যেন তাঁর হাতে। ইচ্ছে করলেই যেন তিন জীবনদান করতে পারেন আমাদের প্রিয় বীর রাজপুত্তুরকে আবার তাঁর ইচ্ছেতে থেমে আছে রাক্ষসের জন্মমৃতশোক। কিন্তু একটাই ভয় সমস্ত জনম মৃত্যুর নিশানা ভেঙে যদি জেগে উঠেন কবি! যদি আমাদের সমস্ত রূপকথার মাঝে টেনে আনেন তাঁর নটে গাছের শব্দখেলা। তখন থেকেই আমার ভয় কবিদের এই রাজত্বে। ঠাকুমাও যেন গুটিগুটি বালিকা হয়ে কবিকে সঁপে দিচ্ছেন তাঁর সমস্ত সত্ত্বা। তাঁর গল্প কথনের ভঙ্গিমা। একমনে আউড়ে চলেছেন   ''আমার কথাটি ফুরাল নটে গাছটি মুড়াল কেন রে নটে মু

গিলগামেষের মহাকাব্য- লিখেছেন সুজন ভট্টাচার্য

প্রবন্ধ সু  জ  ন     ভ  ট্টা  চা  র্য গিলগামেষের   মহাকাব্য ছোটবেলা থেকে আমরা সবাইই শুনে আসি পৃথিবীর প্রথম মহাকাব্য হল রামায়ণ আর আদিকবি হলেন বাল্মিকী। সেই সাথে এটাও আমাদের জানা হয়ে যায়, পৃথিবীতে চারটি মহাকাব্য আছে। আমাদের রামায়ণ – মহাভারত বাদে অন্যদুটি হল গ্রীসের ইলিয়াদ এবং অদিসি। চারটির মধ্যে দুটিই কিনা আমাদের মাটিতে লেখা, ভাবলেই কেমন যেন গর্ব অনুভব হয়। সেই গর্বের আবহাওয়াকে আমরা  মননের জমিতে লালনপালন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এস ওয়াজেদ আলি সেই যে লিখেছিলেন, “সেই ট্র‍্যাডিশন  সমানে চলিতেছে”, তার আলোকে আমাদের বুকও কিঞ্চিৎ স্ফীত হয়ে ওঠে – দেখেছ, মুসলমান হলেও ঠিক স্বীকার করে নিয়েছে।  একটা বিষয়ে সকলেই একমত যে কোন মহাকাব্যই একজন কবির রচনা নয়। বিভিন্ন অনামা কবির কল্পনাতেই মহাকাব্যের প্রাথমিক কাঠামো নির্মিত হয়। এবং গানের মাধ্যমেই সেই রচনা জনসমাজে পরিব্যাপ্ত হয়। নানান সময়ে আরো বিভিন্ন কবি মূল কাঠামোর মধ্যে নিজস্ব শব্দ ঢুকিয়ে দেন। পরবর্তীকালে কোন একজন কবি সেগুলিকে সংকলন করেন এবং তাঁকেই মহাকাব্যের স্রষ্টা বলে গণ্য করা হয়। বাল্মিকীর রামায়ণে লবকুশের রামায়ণগানের উপাখ্যানে সম্ভবত সেই স